মেহেরপুরের গাংনীতে আপন বোন ও ভাইয়ের স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা
মেহেরপুরের গাংনীতে আপন বোন ও ভাইয়ের স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা
মেহেরপুর প্রতিনিধি (১২/১০/২৪):
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শানঘাট গ্রামে আপন বোন জোসনা খাতুন (৫২) এবং ভাইয়ের স্ত্রী জাকিউল ইলমাকে (৪২) কুপিয়ে হত্যা করেছে মহিবুল ইসলাম ওহিদ নামের এক ব্যক্তি। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আজ শনিবার দুপুরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন মহিবুলের ভাই জাহিদ হোসেন ও বোন শামীমা খাতুন (৩২)।
নিহত জাকিউল ইলমা গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ছিলেন।
ধারালো অস্ত্র (রামদা) দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে গেছে মহিবুল ইসলাম ওহিদ। সে শানঘাট পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি এনজিও এর নির্বাহী পরিচালক।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, শানঘাট গ্রামের মহিবুল ইসলাম ওহিদের সাথে তার বড় ভাই জাহিদ হোসেন এবং তিন বোনের মধ্যে পৈত্রিক জমি মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। মহিবুল ইসলাম ওহিদ একাই প্রায় দেড় একর জমির পুকুর দখল নিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। দুই ভাই এবং চার বোন মিলে আজ সকাল থেকে পুকুর ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা চলছিল। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও বাকবিণ্ডা বাধে। এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মহিবুল ইসলাম ওহিদ তার ভাই বোনদের উপর আক্রমণ করে। এতে ঘটনাস্থলেই বোন জোসনা খাতুন ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী জাকিউল ইলমা নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় মহিবুলের ভাই জাহিদ হোসেন ও ছোট বোন শামীমাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদের শারীরিক অবস্থায় আশংকাজনক হওয়ায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে বলে জানান গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আব্দুল আল মারুফ।
ঘটননার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত জোসনা খাতুনের স্বামী কুদরত-ই-হাফিজ জানান, তিন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে জজিজমা ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। মহিবুল ইসলাম ওহিদ বাড়ি পাশের ১ একর ২৮ শতক জমির একটি পুকুর দখল করে আছে। ভাই বোনদের ভাগ নির্ধারণ করার জন্য আজ সবাই মিলে আলোচনায় বসা হয়েছিল। এর পর্য়অয়ে মহিবুল ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনেন মুত্যু হয়। আহত হয় দুজন।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, ভাই বোনদের মধ্যে জমিজমার ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ। এ নিয়ে এর আগেও একবার দু পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। দুপক্ষই আদালতে মামলা দায়ের করেছিল। স্থানীয়ভাবে অনেকবার আলোচনায় বসা হলেও সমস্যা সমাধান হয়নি। দুই ভাই এবং তিন বোন এক পক্ষে এবং মহিবুল একাই তাদের প্রতিপক্ষ। কোন কিছুইতেই মহিবুল তাদের সাথে সমঝোতায় আসেন না। দীর্ঘদিনের বিরোধের জের শেষ পর্যন্ত রক্তাত্ব হত্যাকাণ্ডের পথে গড়াল।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর প্রক্রিয়া করছে পুলিশ। বোন ও ভাবির হত্যাকারী মহিবুল ইসলাম ওহিদকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম।