মেহেরপুরে আমন ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমনে ম্লান কৃষকের সোনালী স্বপ্ন
ঝাঁকে ঝাঁকে বাদামি গাছফড়িং পোকা চুষে খাচ্ছে ধান গাছের রস।
কেউ ধান কাটার তারিখ ঠিক করছেন, কেউ আবার শেষ মুর্হূতের পরিচর্যায় ব্যস্ত। ঠিক এমন একটা সময়ে ঝাঁকে ঝাঁকে বাদামি গাছফড়িং পোকা চুষে খাচ্ছে ধান গাছের রস। ফলে মারাত্মক ফলন বিপর্যয়ে পড়ছে আক্রান্ত ধান ক্ষেত। স্থানীয়ভাবে এ পোকা কারেন্ট পোকা নামে পরিচিত। এর আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে কারেন্ট পোকার আক্রমণ হলেও মেহেরপুর জেলায় এটাই প্রথম।
মেহেরপুর কৃাষ অফিসের তথ্য মতে জেলায় এ বছর আমান ধান চাষের লক্ষমাত্রা ছিলো ২৬৮৩০ মেট্রিকটন আবাদ হয়েছে ২৬৮৪০ মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিলো প্রতি হেক্টোরে ৩.২ মেট্রিক টন হিসেবে ৮৫৮৫৬ মেট্রিক টন। ইতমধ্যেই শুরু হয়েছে আমন ধান কাটা কার্যক্রম। এর মধ্যেই কারেন্ট পোকা নতুন দুশ্চিন্তায় ফেলেছে এখানকার চাষিদের। গত বছর বোরো মৌসূমে বয়ে যাওয়া উচ্চ তাপে ফলন বিপর্যয়ে পড়েছিলেন চাষিরা। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমন আবাদে মনোযোগ দিয়েছিলেন অনেকে। তবে এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আমন ধান আবাদে খরচ বেশি হওয়াতে চাষিরা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়েছেন। সেই চ্যালেঞ্জের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কারেন্ট পোকা। ধান গাছের গোড়ার দিকে বসে চুষে খাচ্ছে গাছের রস। এতে চিটায় পরিণত হচ্ছে ধানের শীষ। দলে দলে অসংখ্য পোকা এক রাতেই যেন সাবাড় করে দিচ্ছে পুরো ক্ষেত। প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই বিনষ্ট হচ্ছে আক্রান্ত ক্ষেতের সব ধান। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্প্রে দিয়েও ধানের ক্ষতি ঠেকানো যাচ্ছে না ।
চাষিরা বলছেন আক্রান্ত ক্ষেতের ধানের আশা ছেড়ে দিয়েছেন তারা, শুধুমাত্র গো খাদ্যের জন্য কাটা হচ্ছে ধান। ধান আবাদে বারবার ক্ষতির মুখে পড়ে হতাশা বাড়ছে চাষিদের। তাই দেশের প্রধান এই খাদ্য উৎপাদন নির্বিঘ্ন করতে আরও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে কৃষি কর্মকর্তাদের প্রতি দাবি জানালেন চাষিরা।
শঙ্কর কুমার মজুমদার, উপ পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মেহেরপুর বলেন, এ অঞ্চলের এবছরে পোকামাকড়ের জন্য অনুকুল আবহাওয়া কারেন্ট পোকা আক্রমণের জন্য দায়ী। তবে ধানের জমিতে প্রয়োজনীয় কীটনাশক প্রয়োগ ও প্রযুক্তির ব্যবহার কারেন্ট পোকা ঠেকাবে বলে মনে করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
ফজলুল হক